ঢাকা ০৪:৪৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২২ মে ২০২৪, ৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মিয়ানমারের প্রতিক্রিয়া বাংলাদেশের জন্য সমস্যার সৃষ্টি করছে

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৩:৫১:০৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৮ সেপ্টেম্বর ২০১৭
  • ২৪৮ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মিয়ানমারের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাখাইন রাজ্যে সশস্ত্র বিদ্রোহ তৎপরতার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, নেপিডোর এই দমন প্রক্রিয়া প্রতিবেশী বাংলাদেশের জন্য সমস্যার সৃষ্টি করছে। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, বাংলাদেশ ইতিপূর্বে মিয়ানমারে (রাখাইন রাজ্য) সংঘটিত (পুলিশ চেকপোস্টে হামলা সম্পর্কিত খবর) কখনো সমর্থন করে না। আঞ্চলিক জোট বিমসটেকের বিদায়ী মহাসচিব সুমিথ নাকানদালা গতকাল প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর কার্যালয়ে সাক্ষাৎ করতে গেলে শেখ হাসিনা একথা বলেন। বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
শেখ হাসিনা বলেন, যে প্রক্রিয়ায় মিয়ানমারের সরকার প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছে তা বাংলাদেশের জন্য সমস্যার সৃষ্টি করছে। প্রধানমন্ত্রী সন্ত্রাসবাদের প্রশ্নে এটাকে সমসাময়িক বৈশ্বিক সমস্যা হিসেবে উল্লেখ করে বলেছেন, এই ভয়াবহতার বিরুদ্ধে সব দেশকে এক সঙ্গে কাজ করতে হবে। নাকানদালা বলেন, বিমসটেক সদস্যদেশগুলো ১৪টি আর্থ-সামাজিক খাতে পারস্পরিক সহযোগিতার ভিত্তিতে কাজ করছে এবং তারা পরিবহন ও যোগাযোগের উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে। তিনি কৃষি সহযোগিতা সম্প্রসারণে এ খাতে মন্ত্রীপর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠানের  ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি আয়ুর্বেদিক ও ইউনানীর মতো প্রচলিত ওষুধের উন্নয়নেও গুরুত্বারোপ করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ এই অঞ্চলের উন্নয়নে বিমসটেকের ওপর গুরুত্বারোপ করে। কারণ তার সরকার এই অঞ্চল থেকে দারিদ্র্য ও ক্ষুধা নির্মূলে কাজ করছে। তিনি বলেন, এই অঞ্চলের দেশগুলো উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাচ্ছে। তবে আরো এগিয়ে যেতে হবে। প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সিনিয়র সচিব সুরাইয়া বেগম বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
রোহিঙ্গাদের সাধ্যমতো সহযোগিতা করছে সরকার: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, মিয়ানমার থেকে আসা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সরকার সাধ্যমতো সহযোগিতা করার চেষ্টা করছে। পাশাপাশি মিয়ানমার সরকারকে তাদের দেশের নাগরিকদের ফিরিয়ে নেয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে। বৃহস্পতিবার রাতে গণভবনে আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে সূচনা বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে সরকারের পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, মিয়ানমার থেকে অনেক রিফিউজি আসছে। ১৯৭৮ সাল থেকে এ রিফিউজি ঢুকছে। আমাদের রেজিস্ট্রার্ড যা আছে তার থেকে আন রেজিস্ট্রার্ড বেশি। মিয়ানমারে একটা ঘটনা ঘটলে সেখান থেকে লোক চলে আসে। সব থেকে মানবেতর অবস্থা নারী ও শিশুরা যেভাবে কষ্ট পাচ্ছে।  নৌকাডুবিতে শিশুরা মারা যাচ্ছে। এটা সত্যি খুব কষ্টের। সহ্য করা যায় না। আমরা দেখেছি ঘটনাগুলো ঘটে যাচ্ছে। এভাবে মানুষ সর্বস্ব হারিয়ে আসছে। আমরা সাধ্যমতো চেষ্টা করছি তাদের সহযোগিতা করতে। প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, মিয়ানমার সরকারকেও চাপ দিচ্ছি যে, তারা তাদের দেশের মানুষ। যারা আমাদের দেশে আছে তাদের যেন ফিরিয়ে নিয়ে যায়। সেটাই আমরা চাই। এরা তাদেরই দেশের নাগরিক। তারা কেন আজকে অন্য দেশে রিফিউজি হয়ে থাকবে? কোনো দেশের মানুষ যদি আরেক দেশে রিফিউজি হয়ে থাকে সেই দেশের জন্য এটা সম্মানজনক নয়। এটা মিয়ানমারকে উপলব্ধি করতে হবে। সেখানকার মানুষ যারা আমাদের দেশে চলে এসে আশ্রয় চাচ্ছে তাদেরকে নিরাপত্তা দেয়া উচিত, ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া উচিত। তাদের জীবন-জীবিকার ব্যবস্থা করে দেয়া উচিত বলে আমি মনে করি। সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বিএনপি-জামায়াতের চরিত্র উল্লেখ করে বিএনপির উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অবাক লাগে যখন নির্বাচন নিয়ে কথা বলে। আর তারা ফ্রি ফেয়ার ইলেকশন নিয়ে কথা বলে। আর তারা অভিযোগ তোলে। আমার মনে হয় তাদের চেহারা আয়নায় দেখা উচিত। এদেশের নির্বাচন নিয়ে যে ঘটনাগুলো ঘটেছে, নির্বাচনকে পরাভূত করা, নির্বাচনের নামে প্রহসন করা, মানুষের ভোটাধিকার কেড়ে নেয়া, এটা শুরু করেছে বিএনপি। আজকে তারা প্রশ্ন তোলে কতজন বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী। ’৯৬ সালের নির্বাচনে তো প্রতিদ্বন্দ্বিতাই হয়নি। ১৬০ থেকে ১৬৪টা আসন ছিল বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায়। ১৮টি আসনে কোনো নির্বাচনই হয়নি। তাদের মুখ থেকে আবার নির্বাচনের ভালোমন্দের কথা শুনতে হয়। এটা কিভাবে বলে আমি জানি না। বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, তিনি নিজেকে প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা দিয়েছিলেন। জনগণ তা মেনে নেয়নি বলে এদেশে আন্দোলন হয়েছিল, গণঅভ্যুত্থান হয়েছিল। খালেদা জিয়া মাত্র দেড় মাসের মধ্যে পদত্যাগে বাধ্য হয়েছে ভোট চুরির অপরাধে। অর্থ চুরি, সম্পদ চুরি, মানি লন্ডারিং, দুর্নীতি, এতিমের টাকা চুরি করে খাওয়া, জনগণের টাকা চুরি করে খাওয়া সব রেকর্ডে চ্যাম্পিয়ন। বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিল পাঁচ পাঁচবার বাংলাদেশ দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের সময়ে প্রতিটি নির্বাচনে জনগণ ভোট দিয়ে তাদের প্রার্থীদের নির্বাচিত করেছে। নির্বাচনের স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স, ছবিসহ ভোটার তালিকা থেকে শুরু করে নির্বাচন যাতে অবাধ ও নিরপেক্ষ হয় তার জন্য যা যা করা দরকার তার জন্য আওয়ামী লীগ ও আমরাই করে দিয়েছি। জনগণের ভোট ও ভাতের অধিকার আমরাই প্রতিষ্ঠা করেছি। জনগণকে যে ওয়াদা আমরা দিয়েছি সেটা রেখেছি। কাজেই জনগণের ভোটের অধিকার নিয়ে কেউ ছিনিমিনি খেলতে পারবে  না। অন্তত এটা আমরা হতে দেব না। আমার ভোট আমি দেব যাকে খুশি তাকে দেব-এ স্লোগানটা আমরাই করেছি। তিনি বলেন, ঢাকা-১০ আসনে খালেদা জিয়ার প্রিয় ব্যক্তিত্ব ফালু নির্বাচন করেছিলেন। সেই নির্বাচনের কি চেহারা ছিল? তেজগাঁও-রমনা মিলে ইলেকশনে সব বুথ ছিল দখলে। মিরপুরের ইলেকশন। সেখানে আমাদের কামাল মজুমদার কনটেস্ট করছিলো। সে জিতে যাচ্ছিলো  দেখে সমানে বোমাবাজি, টোমাবাজি করে ইলেকশনের রেজাল্ট বন্ধ। এরপর ঘোষণা হয়ে গেল খালেক জিতলো। কাজেই বিএনপি ইলেকশনে ভোট কারচুপির যে রেকর্ড করা সেই রেকর্ডগুলো যদি তুলে ধরা হয় তাহলে মানুষ বুঝবে। তারা আবার নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তোলে। নির্বাচন কমিশনকে সম্পূর্ণ শক্তিশালী করা এমনকি আর্থিকভাবে তাদেরকে বাজেটে টাকা দিয়ে দিই তারা খরচ করে। সেজন্য তাদের সরকারের মুখাপেক্ষী হতে হয় না। নির্বাচনের সময় প্রশাসনিক সব ক্ষমতা তাদের হাতে থাকে। তারা বললে বদলি হয় তাছাড়া হয় না। আমাদের সরকারের সময় যতগুলো নির্বাচন হয়েছে সবগুলো স্বচ্ছ হয়েছে। নির্বাচন প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যথাসময়ে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অবশ্যই হবে। এবং সেটা আমরাই এনশিওর করি, ইলেকশন কমিশন স্বাধীনভাবে ইলেকশন পরিচালনা করে। এটা নিয়ে অহেতুক পানি ঘোলার চেষ্টা করা আর সংবিধান লঙ্ঘন করে অন্য কিছু চিন্তা-ভাবনা করা, এই চিন্তা এখন বাংলাদেশে করার আর সময় নাই, সুযোগ নাই। এসময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সজাগ আছে বলে আমরা মানুষের জীবনের নিরাপত্তা দিতে পেরেছি। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকুক বা না থাকুক বন্যার্তদের পাশে দাঁড়িয়েছে। বৈঠকে চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি, দলের সাংগঠনিক কার্যক্রম নিয়ে আলোচনা হয়। এতে দলের কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

মিয়ানমারের প্রতিক্রিয়া বাংলাদেশের জন্য সমস্যার সৃষ্টি করছে

আপডেট টাইম : ০৩:৫১:০৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৮ সেপ্টেম্বর ২০১৭

হাওর বার্তা ডেস্কঃ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মিয়ানমারের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাখাইন রাজ্যে সশস্ত্র বিদ্রোহ তৎপরতার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, নেপিডোর এই দমন প্রক্রিয়া প্রতিবেশী বাংলাদেশের জন্য সমস্যার সৃষ্টি করছে। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, বাংলাদেশ ইতিপূর্বে মিয়ানমারে (রাখাইন রাজ্য) সংঘটিত (পুলিশ চেকপোস্টে হামলা সম্পর্কিত খবর) কখনো সমর্থন করে না। আঞ্চলিক জোট বিমসটেকের বিদায়ী মহাসচিব সুমিথ নাকানদালা গতকাল প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর কার্যালয়ে সাক্ষাৎ করতে গেলে শেখ হাসিনা একথা বলেন। বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
শেখ হাসিনা বলেন, যে প্রক্রিয়ায় মিয়ানমারের সরকার প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছে তা বাংলাদেশের জন্য সমস্যার সৃষ্টি করছে। প্রধানমন্ত্রী সন্ত্রাসবাদের প্রশ্নে এটাকে সমসাময়িক বৈশ্বিক সমস্যা হিসেবে উল্লেখ করে বলেছেন, এই ভয়াবহতার বিরুদ্ধে সব দেশকে এক সঙ্গে কাজ করতে হবে। নাকানদালা বলেন, বিমসটেক সদস্যদেশগুলো ১৪টি আর্থ-সামাজিক খাতে পারস্পরিক সহযোগিতার ভিত্তিতে কাজ করছে এবং তারা পরিবহন ও যোগাযোগের উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে। তিনি কৃষি সহযোগিতা সম্প্রসারণে এ খাতে মন্ত্রীপর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠানের  ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি আয়ুর্বেদিক ও ইউনানীর মতো প্রচলিত ওষুধের উন্নয়নেও গুরুত্বারোপ করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ এই অঞ্চলের উন্নয়নে বিমসটেকের ওপর গুরুত্বারোপ করে। কারণ তার সরকার এই অঞ্চল থেকে দারিদ্র্য ও ক্ষুধা নির্মূলে কাজ করছে। তিনি বলেন, এই অঞ্চলের দেশগুলো উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাচ্ছে। তবে আরো এগিয়ে যেতে হবে। প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সিনিয়র সচিব সুরাইয়া বেগম বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
রোহিঙ্গাদের সাধ্যমতো সহযোগিতা করছে সরকার: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, মিয়ানমার থেকে আসা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সরকার সাধ্যমতো সহযোগিতা করার চেষ্টা করছে। পাশাপাশি মিয়ানমার সরকারকে তাদের দেশের নাগরিকদের ফিরিয়ে নেয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে। বৃহস্পতিবার রাতে গণভবনে আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে সূচনা বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে সরকারের পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, মিয়ানমার থেকে অনেক রিফিউজি আসছে। ১৯৭৮ সাল থেকে এ রিফিউজি ঢুকছে। আমাদের রেজিস্ট্রার্ড যা আছে তার থেকে আন রেজিস্ট্রার্ড বেশি। মিয়ানমারে একটা ঘটনা ঘটলে সেখান থেকে লোক চলে আসে। সব থেকে মানবেতর অবস্থা নারী ও শিশুরা যেভাবে কষ্ট পাচ্ছে।  নৌকাডুবিতে শিশুরা মারা যাচ্ছে। এটা সত্যি খুব কষ্টের। সহ্য করা যায় না। আমরা দেখেছি ঘটনাগুলো ঘটে যাচ্ছে। এভাবে মানুষ সর্বস্ব হারিয়ে আসছে। আমরা সাধ্যমতো চেষ্টা করছি তাদের সহযোগিতা করতে। প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, মিয়ানমার সরকারকেও চাপ দিচ্ছি যে, তারা তাদের দেশের মানুষ। যারা আমাদের দেশে আছে তাদের যেন ফিরিয়ে নিয়ে যায়। সেটাই আমরা চাই। এরা তাদেরই দেশের নাগরিক। তারা কেন আজকে অন্য দেশে রিফিউজি হয়ে থাকবে? কোনো দেশের মানুষ যদি আরেক দেশে রিফিউজি হয়ে থাকে সেই দেশের জন্য এটা সম্মানজনক নয়। এটা মিয়ানমারকে উপলব্ধি করতে হবে। সেখানকার মানুষ যারা আমাদের দেশে চলে এসে আশ্রয় চাচ্ছে তাদেরকে নিরাপত্তা দেয়া উচিত, ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া উচিত। তাদের জীবন-জীবিকার ব্যবস্থা করে দেয়া উচিত বলে আমি মনে করি। সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বিএনপি-জামায়াতের চরিত্র উল্লেখ করে বিএনপির উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অবাক লাগে যখন নির্বাচন নিয়ে কথা বলে। আর তারা ফ্রি ফেয়ার ইলেকশন নিয়ে কথা বলে। আর তারা অভিযোগ তোলে। আমার মনে হয় তাদের চেহারা আয়নায় দেখা উচিত। এদেশের নির্বাচন নিয়ে যে ঘটনাগুলো ঘটেছে, নির্বাচনকে পরাভূত করা, নির্বাচনের নামে প্রহসন করা, মানুষের ভোটাধিকার কেড়ে নেয়া, এটা শুরু করেছে বিএনপি। আজকে তারা প্রশ্ন তোলে কতজন বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী। ’৯৬ সালের নির্বাচনে তো প্রতিদ্বন্দ্বিতাই হয়নি। ১৬০ থেকে ১৬৪টা আসন ছিল বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায়। ১৮টি আসনে কোনো নির্বাচনই হয়নি। তাদের মুখ থেকে আবার নির্বাচনের ভালোমন্দের কথা শুনতে হয়। এটা কিভাবে বলে আমি জানি না। বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, তিনি নিজেকে প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা দিয়েছিলেন। জনগণ তা মেনে নেয়নি বলে এদেশে আন্দোলন হয়েছিল, গণঅভ্যুত্থান হয়েছিল। খালেদা জিয়া মাত্র দেড় মাসের মধ্যে পদত্যাগে বাধ্য হয়েছে ভোট চুরির অপরাধে। অর্থ চুরি, সম্পদ চুরি, মানি লন্ডারিং, দুর্নীতি, এতিমের টাকা চুরি করে খাওয়া, জনগণের টাকা চুরি করে খাওয়া সব রেকর্ডে চ্যাম্পিয়ন। বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিল পাঁচ পাঁচবার বাংলাদেশ দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের সময়ে প্রতিটি নির্বাচনে জনগণ ভোট দিয়ে তাদের প্রার্থীদের নির্বাচিত করেছে। নির্বাচনের স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স, ছবিসহ ভোটার তালিকা থেকে শুরু করে নির্বাচন যাতে অবাধ ও নিরপেক্ষ হয় তার জন্য যা যা করা দরকার তার জন্য আওয়ামী লীগ ও আমরাই করে দিয়েছি। জনগণের ভোট ও ভাতের অধিকার আমরাই প্রতিষ্ঠা করেছি। জনগণকে যে ওয়াদা আমরা দিয়েছি সেটা রেখেছি। কাজেই জনগণের ভোটের অধিকার নিয়ে কেউ ছিনিমিনি খেলতে পারবে  না। অন্তত এটা আমরা হতে দেব না। আমার ভোট আমি দেব যাকে খুশি তাকে দেব-এ স্লোগানটা আমরাই করেছি। তিনি বলেন, ঢাকা-১০ আসনে খালেদা জিয়ার প্রিয় ব্যক্তিত্ব ফালু নির্বাচন করেছিলেন। সেই নির্বাচনের কি চেহারা ছিল? তেজগাঁও-রমনা মিলে ইলেকশনে সব বুথ ছিল দখলে। মিরপুরের ইলেকশন। সেখানে আমাদের কামাল মজুমদার কনটেস্ট করছিলো। সে জিতে যাচ্ছিলো  দেখে সমানে বোমাবাজি, টোমাবাজি করে ইলেকশনের রেজাল্ট বন্ধ। এরপর ঘোষণা হয়ে গেল খালেক জিতলো। কাজেই বিএনপি ইলেকশনে ভোট কারচুপির যে রেকর্ড করা সেই রেকর্ডগুলো যদি তুলে ধরা হয় তাহলে মানুষ বুঝবে। তারা আবার নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তোলে। নির্বাচন কমিশনকে সম্পূর্ণ শক্তিশালী করা এমনকি আর্থিকভাবে তাদেরকে বাজেটে টাকা দিয়ে দিই তারা খরচ করে। সেজন্য তাদের সরকারের মুখাপেক্ষী হতে হয় না। নির্বাচনের সময় প্রশাসনিক সব ক্ষমতা তাদের হাতে থাকে। তারা বললে বদলি হয় তাছাড়া হয় না। আমাদের সরকারের সময় যতগুলো নির্বাচন হয়েছে সবগুলো স্বচ্ছ হয়েছে। নির্বাচন প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যথাসময়ে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অবশ্যই হবে। এবং সেটা আমরাই এনশিওর করি, ইলেকশন কমিশন স্বাধীনভাবে ইলেকশন পরিচালনা করে। এটা নিয়ে অহেতুক পানি ঘোলার চেষ্টা করা আর সংবিধান লঙ্ঘন করে অন্য কিছু চিন্তা-ভাবনা করা, এই চিন্তা এখন বাংলাদেশে করার আর সময় নাই, সুযোগ নাই। এসময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সজাগ আছে বলে আমরা মানুষের জীবনের নিরাপত্তা দিতে পেরেছি। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকুক বা না থাকুক বন্যার্তদের পাশে দাঁড়িয়েছে। বৈঠকে চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি, দলের সাংগঠনিক কার্যক্রম নিয়ে আলোচনা হয়। এতে দলের কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।